মধু খাবার উপকারিতা - মধু খাবার নিয়ম
পোস্ট সূচিপত্রঃমধু খাবার উপকারিতা ও মধু খাবার গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
- মধু খাবার উপকারিতা
- মধু খাবার উপকারিতা ও গুণাবলী
- মধু সম্পর্কিত কিছু হাদিস
মধুর খাবার উপকারিতা ঃ
আমরা যদি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি খাবারের তালিকা তৈরি করি তাহলে প্রথমে থাকবে মধুর নাম। আমাদের শরীরের জন্য মধু খুবই পুষ্টি গুণ সম্পন্ন একটি খাবার এবং আপনি যদি প্রতিদিন মধু সেবন করেন অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এটি অসংখ্য বার অসংখ্য বিজ্ঞানীক প্রমাণ করে দেখিয়ে দিয়েছেন।
মধুতে প্রায় ৪০থেক ৫০টির বেশি উপাদান রয়েছে। ফুলের মধুত ২২ থেকে ৩৫ শতাংশ গ্লুকোজ থেকে থাকে। ফুলের মধুত ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ফ্রুক্টোজ থাকে। আরো ৫.৭ থেকে ৩.৫ শতাংশ সুক্রোজ এবং ৭ থেকে ১৫ শতাংশমন্টোজ । মধুতে আরো ২০ থেকে ৩০ শতাংশ অ্যামাইনো এসিড থাকে। মধুতে ৩০ শতাংশ খনিজ লবণ থাকে এবং ১৫ শতাংশ এনকাইমথাকে। আর মধুতে তেল ও চর্বি নেই বললেই চলে। ২০০ গ্রাম মধুতে ৫৫০ গ্রাম ক্যালরি পাওয়া যায়।
মধু খাবার উপকারিতা ও গুণাবলীঃ
১. শক্তি প্রদায়ীঃমধু আমাদের শরীরে খুবই ভালো শক্তি প্রদয়কারী খাদ্য। মধু আমাদের শরীরে তাপ ও শক্তির খুবই ভালো উৎস। মধু আমাদের শরীরের তাপ ও শক্তি যুগিয়ে পুরো শরীরকে সুস্থ রাখে ।
আরো পড়ুনঃ শিরক এর ভয়াবহ গুনা থেকে বাঁচার উপায়
২. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ঃফুলের মধুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। আর এই মধু কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া দূর করতে সাহায্য করে। এক গ্লাস পানি নিয়ে তার ভিতর ৩ চা চামচ মধু এবং ৪ থেকে ৫ ফোঁটা লেবু মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
৩. হজমেরসহায়তা ঃআমাদের প্রতিদিন ঘর এবং ঘরের বাহিরে নানান খাবার খেতে হয় এতে দেখা দেয় নানান রোগ ব্যাধি। আর পেটের সমস্যার ভালো করার জন্য মধু এক বড় ভূমিকা পালন করে।আর মধুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা যা সহজেই হজম শক্তিতে কাজ করে। ফুলের মধুতে যে পরিমাণ ডেক্সট্রিন রয়েছে তা সরাসরি রক্তের ভিতর প্রবেশ করি খুবই দ্রুত হজমে সাহায্য করে। ফুলের মধু খেলে যে কোন মানুষ যে কোন বয়সে পেটের রোগ থেকে মুক্তি পাবে।
৪.ফুসফুসে যাবতীয় রোগ শ্বাসকষ্ট নিরাময় ঃআমাদের ফুসফুসের যাবতীয় রোগ ও শ্বাসকষ্ট ভালো করার জন্য ফুলের মধুর ভূমিকা অপরিসীম। আপনি যদি একজন শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীর কাছে গিয়ে ফুলের খাঁটি মধু রাতের ঘুমানোর আগে তার নাকে লাগিয়ে দেওয়া হয় তাহলে সে ব্যক্তি ভালো করে শ্বাস নিতে পারবে। অনেক ডাক্তার মনে করে অনেকদিন ধরে শ্বাসকষ্ট চিহ্নিত রোগী এতে খুব জলদি ভালো হয়ে উঠবে।
৫. রক্তশূন্যতা ঃফুলের মধু রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। আর মধু রক্তশূন্যতায় একটি কার্যকরী সমাধান। কারণ,ফুলের মধুতে প্রচুর পরিমাণে কপার থাকে।
আরো পড়ুনঃ ত্বীন ফলের উপকারিতা ও ত্বীন ফলের গুনাগুন
৬. যৌন দুর্বলতা ঃবর্তমান সময়ে শতকরা ৯৫ ভাগ পুরুষেরই যৌন দুর্বলতা রয়েছে। আর খাঁটি ফুলের মধু পুরুষের যৌন দুর্বলতা ভালো করার জন্য অনেক বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। যে সব পুরুষ যৌন দুর্বলতায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন খাঁটি ফুলের মধু সকালে খালি পেটে ২ থেকে ৩ চা চামচ এবং রাতে ঘুমানোর আগে ২ থেকে ৩ চা চামচ খেলে আশা করি যৌন দুর্বলতা ভালো হয়ে যাবে। আর যে সব পুরুষদের লিঙ্গে সমস্যা আছে তারা প্রতিদিন তাদের লিঙ্গে সকাল এবং রাতে সামান্য কিছু পরিমাণ মধু নিয়ে ২০ থেকে ৩০ মালিশ করলে আশা করিনি যৌন সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
৭. অনিদ্রা ঃযাদের রাতে ঘুম হয় না তাদের জন্য খাঁটি ফুলের মধ্যে কার্যকরী সমাধান। সকালে ঘুম থেকে উঠে ও রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পানির মধ্যে ২ থেকে ৩ চা চামচ মধু ভালো করে মিশিয়ে খেয়ে নিলে আশা করছি ঘুমের যাবতীয় সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
৮. দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে মধুর প্রয়োজনঃআমাদের প্রতিদিন প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে কম্পিউটার ,ল্যাপটপ,মোবাইল টেলিভিশন দেখতে হয় এতে আমাদের চোখের রেটিনা আর দুর্বল হয়ে যায়। ফলে আমরা ধীরে ধীরে চোখের জ্যোতিটা হারিয়ে ফেলি ফলে আমাদের খুবই কম বয়সে চশমার ব্যবহার করতে হয়।
আগে দেখা যেত ৫০ থেকে ৬০ উর্ধ্ব মানুষ চশমা ব্যবহার করত বর্তমান সময়ে ১৫ থেকে ২০ বছরে ছেলে -মেয়েরা চশমা ব্যবহার করেছে এতে করে বোঝা যায় আমাদের চোখের জ্যোতি ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছি। আর চোখের জ্যোতি ফিরে পাওয়ার একমাত্র সমাধান খাঁটি ফুলের মধু। আমরা যদি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগে রাতে শোবার আগে ৩ থেকে ৪ চা চামচ মধু খেয়ে থাকি তাহলে আমরা আবার আমাদের পুরনো দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবো ।
৯. রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা ঃবর্তমান সময়ে আমরা ছেলে-মেয়ে একটা বিষয় টেনশন করি সেটা হল আমাদের রূপচর্চা। আর রূপচর্চা আরও বৃদ্ধি করার জন্য খাঁটি ফুলের মধু অনেক বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতিদিন সকালে ২থেকে ৩ চা চামচ খাঁটি ফুলের মধু নিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে তারপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
প্লাস্টিকের ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা বিস্তারিত জানুন
আবার আমরা যদি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতেই ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পানির মধ্যে ২ থেকে ৩ চা চামচ মধু নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে খেয়ে নি তাহলে আমাদের হারানো উজ্জ্বলতা ও নমনীয়তা আবার ফিরে আসবে।
মধু সম্পর্কিত কিছু হাদিস ঃ
আধুনিক বিজ্ঞান যেগুলো আজ আবিষ্কার করছে সেগুলো মহান আল্লাহ তা'আলা ১৪০০ বছর আগে পবিত্র কোরআনে মাধ্যমে বলে দিয়েছে মৌমাছি ও প্রধান বিষয় আল কোরআনে ব্যাখ্যা দিয়েছে।
১.মৌমাছির উদর হইতে নির্গত হয় বিবিধ বর্ণের পানীয় , যাহাতে মানুষের জন্য রয়েছে আরোগ্য (সূরা নাহল ৬৮ )
২.আম্মাজান আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা থেকে বর্ণিত-তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধু ও হালুয়া বা মিষ্টি পছন্দ করতেন । (সহি বুখারী, হাদিস নং ৫২৬৮)
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url