অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ - মেয়েদের মাসিক হলে করণীয়
পোস্ট সূচিপত্রঃঅবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ - মেয়েদের মাসিক হলে করণীয়
- মেয়েদের মাসিক কেন হয়
- মেয়েদের মাসিক হলে করণীয়
- মেয়েদের মাসিক হওয়ার লক্ষণ
- মেয়েদের মাসিক হলে কি কি খাওয়া উচিত
- মেয়েদের মাসিক হলে ওষুধ খাওয়ার নিয়ম
মেয়েদের মাসিক কেন হয়ঃ
মাসিক মেয়েদের জন্য একটি সাধারণ ঘটনা। দুই থেকে সাত দিন মাসিক হয়ে থাকে প্রতি মাসে একজন নারীর। একটা মেয়েকে গোড়ে পাঁচ বছর মাসিক এরব্যাথা সহ্য করতে হয় পুরো জীবনের। কুসংস্কার শেষ নেই এখনো আমাদের সমাজে মেয়েদের মাসিক নেই। কুসংস্কার নিয়ে পড়ে থাকার কোন মানে নেই এই ডিজিটাল যুগে।
মেয়েরা গর্ভধারণ করতে পারে মাসিক আছে বলে। হরমোনের প্রভাবে প্রতি মাস পর পর এক ধরনের পরিবর্তন দেখা দেয় জরায়ু চক্রে আর এই পরিবর্তনের ফলে মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড হয়। আর এই সময় মেয়েদের যোনিপথ দিয়ে রক্ত নির্গত হয়।
আরো পড়ুনঃ
তিন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও গুনাগুন
৩ থেকে ৫ লাখ অনিষিক্ত ডিম্বাণু থাকে একটি মেয়ের ডিম্বাশয়ে যখন তার বয়সন্ধিকাল হয়। প্রতিমাসে হরমোন নিঃসৃত করে বিভিন্ন ধরনের পিটুইটারি গ্রন্থি। দুটি চক্রের জন্য প্রস্তুতি নেই ডিম্বাশয় চক্র ও জরায়ু চক্র। নিষিদ্ধ হওয়ার প্রস্তুতি নেই যে কোন একটি ডিম্বাণু হরমোন নির্গত করার জন্য । আর এরম বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দিয়ে মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড হয়।
মেয়েদের মাসিক হলে করণীয়ঃ
৯ থেকে ১১ বয়সে মেয়েরা কিশোরী হয়ে ওঠে ।কিশোরী অবস্থা থেকে মেয়েদের পিরিয়ড বা মাসিক হয়। কিন্তু এই মহা বিপদেও পিরিয়ড বা মাসিক নিয়ে মেয়েরা কারো সাথে আলোচনা করতে লজ্জা বোধ করে। দোকানে গিয়ে কখনো নিজেও প্যাডও কিনে না।
যখন ডিজিটাল ও শিক্ষিত নগরী যুগে এসেও এই অবস্থা। অন্যদের বেলায় তখন আর কি বলা যায়। বাংলাদেশ পিরিয়ড বা মাসিক এর সময় ৮৫ এত শতাংশ মেয়েই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে। পৃথিবীর প্রত্যেকটা নারীর জীবনে পিরিয়ড বা মাসিক একটি সাধারণ প্রক্রিয়া। তাই এটাকে নিয়ে ভয় বা সংকোচ হওয়ার কোন কারণ নেই। একটা মেয়ের নিয়মিত পিরিয়ড বা মাসিক হওয়ার অর্থ ,হলো সেই মেয়েটা সন্তান ধরনের সক্ষম।
কিন্তু মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড নিয়ে মানুষের স্বাভাবিক নয় দৃষ্টিভঙ্গি
এখনো। বাংলাদেশে পিরিয়ড বা মাসিক হওয়ার সময় ৯৫ আর শতাংশ মেয়েরা
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবন যাপন করার জন্য বেশিরভাগ মেয়েই প্রসাবের
ইনফেকশনে ক্যান্সারের আক্রান্ত হন।
আরো পড়ুনঃ
প্লাস্টিক ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা বিস্তারিত জানান
WHO ২০১৯ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে বাংলাদেশের মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড চলাকালীন সময় ৩৭ শতাংশ নারী প্যাড ব্যবহার করে,৬৫ শতাংশ নারী পুরনো কাপড় ,২৫ নতুন কাপড় ব্যবহার করে।মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড চলাকালীন সময় কিছু নিয়ম-কানুন তুলে ধরা হলোঃ-
স্যানিটারি প্যাডঃবাংলাদেশে মেয়েরা মাসিক বা পিরিয়ড চলাকালীন সময় বেশিরভাগ মেয়েই সেনিটারি প্যাড এর দাম বেশি হওয়ার কারণে পুরোনো কাপড় ব্যবহার করে থাকে। এতে দেখা দেয় আমাদের নানান স্বাস্থ্যঝুঁকি। মাসিক চলাকালীন সময়ে আমাদের স্বাস্থ্য নিরাপদ ও পরিষ্কার -পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য আমাদের সেনিটারি প্যাড ব্যবহার করতে হবে। এতে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুকি কমবে এবং জরায়ুতে ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমবে । তার জন্য আমাদের সবাইকেই সচেতন থাকতে হবে।
পিরিয়ড বা মাসিক চলাকালীন সবাইকে প্যাড পড়তে হবে । ৫ থেকে ৬ ঘন্টা পরপর স্যানিটারি প্যাড পরিবর্তন করতে হবে।স্যানিটারি প্যাড দুটি একসাথে পড়া যাবে না। যোনিপথে ব্যাকটেরিয়া এড়াতে মাঝেমধ্যে প্যাড পরিবর্তন করতে হবে। যোনিপথে যেন সংক্রমণ না হয় তার জন্য যোনিপথের স্থানটা সব সময় শুকনা রাখতে হবে।
নিয়মিত গোসলঃপিরিয়ড বা মাসিক হলে আমাদের প্রতিদিন নিয়মিত গোসল করতে হবে। আর প্রতিদিন গোসল না করলে যোনিপথে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হয়ে পেশাবের জরায়ুতে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। এতে নারীর মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।
মেয়েদের মাসিক হওয়ার লক্ষণঃ
ক্ষুধা লাগাঃ মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড হলে প্রতি নিয়ত ক্ষুধা লাগে। এ সময় প্রত্যেকটি মেয়ের করনীয় পুষ্টিকর ফলমূল খাওয়া এবং বেশি করে পানি পান করা। পুষ্টিকর ফলমূল খেলে আপনার শরীর থেকে পিরিয়ডের সময় যে রক্তটা বেরিয়ে যায় সে রক্তটা যোগান সাহায্য করবে।
মেজাজ খিটখিটেঃঅসুস্থ থাকতে আমাদের কারোই ভালো লাগে না। আর যখন মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড হবে তখন মেজাজ এমনিতে খিটখিট হয়ে ওঠে। আর আপনার মেজাজ ভাল করতে । আপনি আপনার পছন্দের জায়গায় গিয়ে ঘুরতে পারেন। এবং আপনার যা যা খেতে ইচ্ছে করে সেটা আপনি খেতে পারেন আশা করা যায় এতে আপনার মেজাজ ভালো হয়ে যাবে।
হালকা মাথাব্যথাঃপিরিয়ড বা মাসিক চলাকালীন মেয়েদের শরীর থেকে অনেকটাই রক্ত বেরিয়ে যায়। এতে করে তাদের হালকা মাথাব্যথা অনুভব হয়। মাথা ব্যাথা ভালো করতে আপনি পুষ্টিকর খাবার, ও নিরাপদ পানি পান করতে পারেন আশা করা যায়।আপনার মাথা ব্যাথা ভালো হয়ে যাবে।
ঘুমের সমস্যাঃমেয়েদের পিরিয়ড বা মাসিক চলাকালীন ঘুম খুবই কম হয় কারণ এ সময়ে তাদের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীর থেকে অনেক রক্ত বেরিয়ে যায়। এই সময় তাদের হালকা মাথাব্যথা থাকে। পিরিয়ড চলাকালীন তারা বিশ্রাম নিলে আশা করা যায় ঘুমের সমস্যাটা ভালো হয়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ
মধু খাবার উপকারিতা ও মধুর গুনাগুন
তলপেটে ব্যথাঃমেয়েদের পিরিয়েড বা মাসিক এর সময় মেয়েদের পেটে অনেক ব্যথা হয় কারণ এ সময়ে তাদের শরীর থেকে অনেক রক্ত বেরিয়ে যায়। তার কারণে তাদের এ ব্যথা অনুভব হয়। এ সময়ে হালকা কুসুম পানি গরম করে ।একটি পলিথিনে পড়ে পেটে শেক দিতে হবে শেখ দিলে আশা করা যায় পেটের ব্যাথা ভালো হয়ে যাবে।
মেয়েদের মাসিক হলে কি কি খাওয়া উচিতঃ
পিরিয়ড হচ্ছে অবিচ্ছেদ্য অংশ একজন নারীর জন্য। পিরিয়ড বা মাসিক একটি উপহার একটি নারীর জন্য প্রকৃতপক্ষে কারণ পিরিয়ড বা মাসিক না হলে কোন মেয়েই মা হতে পারবেনা। একজন মায়ের জন্ম হয় শুধু পিরিয়ডের মাধ্যমে। প্রত্যেকটি নারীর জন্য পিরিয়ড চলাকালীন সময়টা অত্যন্ত কঠিন। এ সময়ে প্রত্যেকটি নারীকেই মানসিক ও শারীরিক নানান সমস্যার মাধ্যম দিয়ে যেতে হয়। চলুন আজকে জেনে নিই মেয়েদের মাসিক চলাকালীন কি খাওয়া উচিত।
পানি পান করাঃএকটি মেয়ের পিরিয়ড বা মাসিক চলাকালীন সময়ে রক্তের পাশাপাশি অনেকটা পানিও বেরিয়ে যাই শরীর থেকে। এ সময়ে আমাদের প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। আর তবে অন্য কোন তরল পানি নয় যেমন, এনার্জি ড্রিংক ,কোকাকোলা ,চা ও কফি। পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে শুধু বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।
ভিটামিন বি জাতীয় খাবারঃভিটামিন বি জাতীয় খাবার পিরিয়ড বা মাসিক ভালো করতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে (যেমন , আলু ,টমেটো ,গাজর ,লেবু ,কমলা লেবু ,ডিম , আখরোট , কাজুবাদাম ,কাঠুবাদাম ,ইত্যাদি) তে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি রয়েছে। আর এসব খাওয়ার ফলে হাড় ক্ষয় , শরীরের দুর্বলতা , পিরিয়ডের সমস্যা, স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি ইত্যাদির রোগ ভালো করে।
আয়রনঃপিরিয়ডের হারানো শক্তি ফেরাতে আয়রন অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। আর আমাদের পিরিয়ড চলাকালীন সময় যেসব খাবার আছে আয়রন আছে শুধু সেসব খাবার খেতে হবে (যেমন মাছ ,মাংস , ডিম ,কলিজা ,কচু শাক ,ডাটা শাক ,ফুলকপি ,পাতাকপি ,কাজুবাদাম ,কাঠবাদাম ,তরমুজ , খোরমা খেজুর ,পাকা তেতুল ,ইত্যাদি)। আশা করা যায় এগুলো খেলেই আপনাদের পিরিয়ডের হারানো শক্তি আবার ফিরে পাওয়া যাবে কোন ডাক্তারের কাছে যাওয়া লাগবে না।
ফলঃপিরিয়ড বা মাসিক চলাকালীন সময়ে শরীরের জন্য খুবই উপকারী ভিটামিন সি যুক্ত ফল। (যেমন , আপেল ,কমলা ,বেদেনা ,আঙ্গুর ফল,পিয়ারা ,কমলালেবু ,মালটা ,টমেটো ,পাকা পেঁপে ,জলপাই ও আনারস ইত্যাদি)। এসব খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি।
ক্যালসিয়ামঃমেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে ক্যালসিয়ামযুক্ত খাওয়ার খুবই প্রয়োজন। এতে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি অনেকটাই কমে দেয়। আমাদের পিরিয়ড হলে খাবারের তালিকায় সবসময় ক্যালসিয়াম জাতীয় খাওয়া থাকতে হবে (যেমন,দুধ ,ডিম ,কলা ,কাঁটাযুক্ত মাছ ,কাজুবাদা ,কাঠবাদাম , মাংস ও ডাল ইত্যাদি)। ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার,মাথা খিটখিটে ,পেট ব্যথা,বমি বমি ভাব,ঘুমের সমস্যা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
মেয়েদের মাসিক এর কিছু ওষুধের নামঃ
- NORETHISTERONE 5 MG
- ORGAMETRIL
- LYNESTRENOL 5 MG
- OVRALL
- UNWANTED
- DYSMENORRHEA
- FLAMEX 200
- FLAMEX-400
- CAPSULE 50 MG
- CELECOXIB 56 MG
- COX B 100
- PARACETAMOL 100 MG
- ACE
- ALGIN
- TRAXYL
- HPR D5
- FEVIZ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url