রাজশাহী কিসের জন্য বিখ্যাত বিস্তারিত জানুন -তানভীর আইটি
আপনি যদি জানতে চান রাজশাহী শহর কিসের জন্য বিখ্যাত তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য আমি বলছি আপনি যদি এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন করতে পারেন তাহলে রাজশাহী কিসের জন্য বিখ্যাত বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পোস্ট সূচীপত্রঃরাজশাহী কিসের জন্য বিখ্যাত বিস্তারিত জানুন
- রাজশাহী শহর কেন এত সুন্দর
- রাজশাহীর ইতিহাস
- রাজশাহী কিসের জন্য বিখ্যাত
- রাজশাহীর ভ্রমণের স্থান
- রাজশাহী শহরেরকিছু বিখ্যাত মানুষ
রাজশাহী শহর কেন এত সুন্দরঃ
আমরা সকলেই রাজশাহীন সুনাম শুনেছি । কিন্তু ৫ বছর আগে আমাদের সকলের কাছে সবচেয়ে
সুন্দর শহর ছিল রংপুর ও চট্টগ্রাম। এখন রাজশাহী , রংপুর ও চট্টগ্রাম কে সরিয়ে
বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন নগরীর খেতাব অর্জন করেছে। রাজশাহী
শুধু বাংলাদেশের পরিষ্কার -পরিচ্ছন্ন নগরী না এটি হচ্ছে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে
পরিষ্কার -পরিচ্ছন্ন ও সুন্দরী নগরী। কোন জাদুর কলে রাজশাহী এত সুন্দর
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নগরী হয়ে উঠলো সেটাই আমরা আজকে জানবো।
আরো পড়ুনঃ প্লাস্টিক ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা বিস্তারিত জানুন
রাজশাহী নামটা শুনলেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও আলো ঝিকিমিকি এক শহরের নাম চলে আসে।
সেটা কি একদিনের মধ্যে হয়ে গেছে না। রাজশাহী শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শহর তৈরি
করতে নিতে হয়েছে নানা পরিকল্পনা ।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এর দিন আমি রাজশাহীর মাটিতে পা রাখি । রাজশাহীর উন্নতি দেখে আমার চোখ কপালে উঠে গিয়েছিল। নিজের চোখে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমার মনে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল রাজশাহী শহর এত সুন্দর কিভাবে হলো কেন হলো তারপরে আমি বুঝতে পারি কেন বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর শহর রাজশাহী কে বলা হয়।
রাজশাহীর সমস্ত রাস্তাগুলো ঝকঝক করছে । কোথাও কোন কাগজের টুকরো পড়ে নেই । আমরা পুরো শহরটা বাইকে করে ঘুরলাম আমার এক বড় ভাইয়ের সাথে ।তার নাম সিজান সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করছে। মিজান ভাই বাইক চালাইতে ছিল আর আমাকে রাজশাহীর রাস্তাঘাট বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখাচ্ছিল।
সিজান ভাই আমাকে আরো জানালেন, সিটি কর্পোরেশনের লোক বাড়ি বাড়ি গিয়ে ময়লা ফেলার ব্যাগ দিয়ে এসেছে। সবাই মিলে ময়লার ব্যাকে ময়লা ফেলে। সেই ময়লা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করে নিয়ে যায় সিটি কর্পোরেশনের লোক । আর কেউ যদি রাস্তাঘাটে ময়লা ফেলে তাহলে তাকে বড় ধরনের জেল ও জরিমানা করা হয়।
প্রতিদিন ২ থেকে ২ বার রাস্তা ঝাড়ু দেওয়া হয়। আর কেউ যদি রাস্তায় ,
প্লাস্টিকের বোতল, কাগজে টুকরা , কফ ও থুতু , ময়লা ও আবর্জনা , চিপস এর প্যাকেট
, রাস্তায় ফেলে তাহলে তাকে জেল ও জরিমানা করা হয়। এর জন্যই রাস্তাঘাটে কেউ
ময়লা ফেলে না।এর জন্যই রাজশাহী শহর এত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে।
বিকেল পাঁচটায় আমিও সিজন ভাই গিয়েছিলাম পদ্মা নদীর পাড়ে। আমরা গিয়েছিলাম তালাইমারি থেকে একটু দূরে পদ্মা গার্ডেন এর পাশে শহীদ মিনারে শহীদদের স্মৃতি স্মরণে । পদ্মা গার্ডেনের এই জায়গাটায় ছিল ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীদের চরণভূমি। সেই পদ্মা পাড়ের জায়গাটা ছিল সাধারণ সুন্দর কোথাও কোন ময়লা আবর্জনা ছিল না। সেদিন বিকেলে আমরা পদ্মা পাড়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরলাম জায়গাটা ছিল অসাধারণ এবং আমার অনেক মজা করলাম এই দিনটার কথা সারা জীবন মনে থাকবে।
২০১৫ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি বিলাতের কাগজ গার্ডিয়ান একটি প্রতিবেদন প্রকাশ
করেছিল। রাজশাহী শহর কিভাবে বায়ু দূষণ কমিয়ে ফেলেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে
রাজশাহী শহরে কোন খোলা ধুলার জায়গা নেই ।সড়ক দ্বীপ বিভাজক গুলো
গাছে ও ঘাসে ঢাকা। রাস্তায় ধুলা বা কাগজ পড়ে নেই ।রাজশাহী শহরে বায়ু দূষণ
কিন্তু আবার বেড়ে গেছে। ১০ ফেব্রুয়ারি বায়ু দূষণের সূচক ছিল ১৬১। পিএম
ঘনত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সীমার ১৫ গুণ।
আরো পড়ুনঃ ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও ত্বীন ফল খাবার গুনাগুন
আরো অনেক সমস্যা আছে যেমন রাজশাহী শহরে অনেক সুন্দর বাস টার্মিনাল আছে ।কিন্তু সেখানকার বাস ড্রাইভাররা বাস টার্মিনাল এর ভেতর বাস রাখতে চায় না। রাস্তা দুই পাশে রাখা হয়। এতে তাদের কোন সমস্যা না হলে সমস্যা হয় অন্য কোন যানবাহন রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে। রাস্তার ধারে দুই পাশে বাস থাকার কারণ দেখা দেয় যানজট এতে সেখানকার মানুষদের পড়তে হয় নানা দুর্ভোগে ।
রাজশাহীর ইতিহাসঃ
এক সময় রাজশাহী ছিল প্রাচীন বাংলার পুন্ড্র সাম্রাজ্যের অংশ। আর সেন বংশের বিখ্যাত রাজা বিজয় সেনের সময় কাল রাজশাহী শহরের বর্তমান রাজধানী রাজশাহী শহর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছিল। মধ্যযুগে রাজশাহী পরিচিত ছিল বর্তমান রামপুরা ও বোয়ালিয়া নামে। আর সেই সূত্র ধরে রাজশাহী একটি শহরের থানার নাম বোয়ালিয়া থানা। আর যেটা সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে অবস্থিত।
আরো পড়ুনঃ টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও টক দই এর পুষ্টিগুণ
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে দক্ষিণ ও পশ্চিমে রাজশাহী শহর অবস্থিত। রাজশাহীর জেলার সংখ্যা ৮ টি। উপজেলা সংখ্য৬৭ টি। ইউনিয়ন সংখ্যা ৫৬৩ টি। থানা ৯ টি। মোট আয়তন ২৪০৭.০১ বর্গ কিলোমিটার। রাজশাহী জেলার উত্তরে নওগাঁ জেলা , দক্ষিনে কুষ্টিয়া জেলা ,পূর্বে নাটোর জেলা পশ্চিমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা । ভৌগলিকভাবে রাজশাহী জেলাকে চারদিক থেকে বিভিন্ন জেলা ঘিরে রাখে।
রাজশাহী যে বিষয়গুলোর জন্য বিখ্যাতঃ
- আম
- লিচু
- রেশমিবস্ত্র
- সিল্ক শাড়ি
- মিষ্টি জাতীয় খাবার
- নাটোরের কাঁচা গোল্লা
- খেজুরের রস
- খেজুরের গুড়
- নানান ধরনের নানান পদের পিঠা
- উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা
- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নগরী
- মানুষের ভালো ব্যবহার
রাজশাহীর ভ্রমণের স্থানঃ
- পদ্মার পাড়
- বাঘা মসজিদ
- হাওয়াখানা
- নাটোর রাজবাড়ি
- বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
- পুঠিয়া রাজবাড়ী
- রাজশাহী পদ্মা গার্ডেন
- রাজশাহী মুক্তমঞ্চ
- রাজশাহী আই বাদ
- রাজশাহী টি বাঁধ
- রাজশাহী শিশু পার্ক
- নাটোরে গ্রীন ভ্যালি পার্ক
- নাটোর মিনি কক্সবাজার
- পুঠিয়া কালিশার পুকুর
- সারদা পুলিশ একাডেমি
- রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ
- দুর্গাপুর পাচু বাড়ি মসজিদ
- শহীদ জিয়া পার্ক
- নীলকুঠি
- গোয়ালন্দ ঘাট
- কল্যানদিঘী
- হযরত শাহ মাখদুম রূপসী দরগা শরীফ
রাজশাহী শহরের কিছু বিখ্যাত মানুষঃ
- আব্দুল হামিদ খান ভাসানী
- মোহাম্মদ মনসুর আলী
- আব্দুল হাসান মোঃ কামরুজ্জামান
- শহীদ এ এইচ এম কামরুজ্জামান
- কুমার শরৎ কুমার রায়
- অক্ষয় কুমার মৈত্র
- যদুনাথ সরকার
- রাধা গোবিন্দ বসাক
- মৌলভী শামসুদ্দিন আহমেদ
- মোখলেসুর রহমান
- নরোত্তম দাস ঠাকুর
- কবি সুকুর মোহাম্মদ
- কৃষ্ণে রায়
- জগদীশচন্দ্র রায়
- মীরজা মোহাম্মদ শেখ আলী
- প্রমথনাথ রায়
- রানী ভবানী
- হরনাথ রায়
- রাজকুমার সরকার।
- হাজী লাল মোহাম্মদ সরদার
- এমাদউদ্দিন আহমেদ
- আহসান উল্লাহ মোল্লা
- ইদ্রিস আহমেদ
- আশরাফ আলী খান চৌধুরী
- কাজী আব্দুল মাজিদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url