ত্বীন ফল খাবার উপকারিতা - ত্বীন ফল খাবার নিয়ম
পোস্ট সূচিপত্রঃত্বীন ফল খাবার উপকারিতা -ত্বীন ফলের গুনাগুন
- ত্বীন ফলের উপকারিতা
- ত্বীন ফলের গুনাগুন
- ত্বীন ফল খাওয়ার নিয়ম
- ত্বীন ফল নিয়ে হাদিস
- ত্বীন ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যাবে
ত্বীন ফলের উপকারিতাঃ
ডুমুর বা ত্বীন ফলের উপকারিতা নিয়ে আজকে আমরা কথা বলব। ডুমুর বা ত্বীন ফল বাংলাদেশিদের জন্য প্রিয় খাবার। তাই ডুমুর বা ত্বীন ফল খেতে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই ভালোবাসে। ডুমুর বা ত্বীন ফল একটি রসালো,সুস্বাদু ও নানান পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল। চলুন বন্ধুরা আজকে আমরা ডুমুর বা ত্বীন ফল সম্পর্কে জানব।
বিভিন্ন ভিটামিন রয়েছে ডুমুর বা ত্বীন ফলের মধ্যে। ডুমুর ও ত্বীন ফল আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। তাই আমাদের সবসময়ই ডুমুর বা ত্বীন ফল খাওয়া উচিত। চলুন বন্ধুরা ডুমুর বা ত্বীন ফল খাবার কিছু উপকারিতা জেনে আসি।
আরো পড়ুনঃ
প্লাস্টিক ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা বিস্তারিত জানান
মাসিকের সময়ঃ মেয়েদের মাসিক ভালো করতে ডুমুর বা ত্বীন ফল অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। যদি কোন মেয়ের মাসিক হয় তাহলে সে যেন এক গ্লাস দুধের সাথে ২ থেকে ৩ টি ডুমুর বা ত্বীন ফল নিয়ে দুধের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে খেলে আশা করা যায় মাসিক ভালো হয়ে যাবে। ডুমুর বা ত্বীন ফল খেলে মেয়েদের মাসিকের সাথে সাথে রক্তপিওা, রক্তস্রাব, ধাতুস্রাব এবং আরো নানা রোগ ভালো হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।
সাদা ও রক্ত আমাশাঃরক্ত আমাশা ভালো করতে ত্বীন বা ডুমুর ফল অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। কারো যদি রক্ত আমাশা হয় তাহলে সে ডুমুর গাছের ছাল চিপে ৩ থেকে ৪ চা চামচ রস বের করে নিয়ে তার সাথে ২ থেকে ৩ চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে আশা করা যায় রক্ত আমাশা ভালো হয়ে যাবে । কোন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া লাগবে না।
জ্বর হলেঃজ্বর কমাতে ডুমুর ফল আমাদের অনেক বড় সহায় হোক হিসাবে কাজ করে। যদি আমাদের কখনো জ্বর হয় তাহলে। ডুমুর ডুমুরের গাছের ছাল থেকে রস বের করে নিয়ে ৩ থেকে ৪ চা চামচ রস নিয়ে এক গ্লাস দুধের সাথে ভালো করে মিশিয়ে খেলে আশা করা যায় জ্বর তৎক্ষণাৎ কম হতে শুরু করবে। আশা করা যায় কোন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া লাগবে না এবং কোন ওষুধ খাওয়া লাগবেনা।
মাথা ঘোরা ও বমি ভাবঃমাথা ঘোরাও বমি বমি ভাব এর সমস্যার ভালো করার জন্য ডুমুর অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। আমাদের প্রতিনিয়ত জীবিকার জন্য বাইরে বেরোতে হয়। বাইরে বেড়ানোর পর নানান কাজ করতে হয়। আর এ কাজ করার ফলে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি আর এই ক্লান্ত দুর করতে ডুমুর ফল অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।
আর আমরা যদি ক্লান্ত হয়ে পড়ি তাহলে প্রতিদিন সকালে ও বিকালে ৩ থেকে ৪ টি টি ডুমুর ফল খেলে আশা করা যায় আমাদের মাথা ঘোরাও বমি বমি ও সকল ক্লান্ত ভাব দূর হয়ে যাবে। আর এই ডুমুর ফলটি সপ্তাহ ৫ থেকে ৬ দিন খেতে হবে খেলে আশা করা যায় মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব সারা জীবনের জন্য দূর হয়ে যাবে।
হেঁচকি ওঠাঃহেঁচকি ওঠার সমস্যার জন্য ডুমুর বা ত্বীন ফল অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। যদি কারো হেঁচকি ওঠা অসুখ হয় তাহলে ডুমুর ফলের বাইরের অংশ কেটে সেই কাটা অংশ পানিতে ভিজিয়ে রেখে এক ঘন্টা পর, ছেকনি দিয়ে ভালো করে ছেঁকে সেই পানির সাথে ৩ থেকে ৪ চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে আশা করা যায় হেঁচকি ওঠা সারা জীবনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। আর এটা সপ্তাহে ৫ থেকে ৬ দিন খেতে হবে।
আরো পড়ুনঃ হাতের লেখা সুন্দর করার উপায় বিস্তারিত জানুন
ডায়াবেটিকসঃডায়াবেটিস ভালো করতে ডুমুর ফল অনেক বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করে। যদি কারো ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে থাকে। তাহলে সে যেন ডুমুর ফলে ছাল তুলে সেটা ভালো করে বেটে নিয়ে সেখান থেকে রস বের করে। সে রসের সাথে তিন থেকে চার চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে আশা করা যায় ডায়াবেটিস অনেক অংশে কমে যাবে। আবার সেই ডুমুরের সালের রস নিয়ে কুসুম কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে আশা করা যায় ডায়াবেটিস ভালো হয়ে যাবে।
ত্বীন ফলের পুষ্টিগুণঃ
ডুমুর বা ত্বীন ফল নামে পবিত্র কোরআন শরীফে একটি সুরাও আছে। যেখানে স্বয়ং আল্লাহ ডুমুর বা ত্বীন ফল নিয়ে কসম খেয়েছেন এবং তিনি আরো বলেছেন এটি একটি জান্নাতি ফল। ডুমুর বা ত্বীন ফলের রয়েছে নানান ভিটামিন খনিজ পদার্থ। ডুমুর বা ত্বীন ফলে প্রতি ১৮০ গ্রামে রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন ও খনিজ যেমন ঃ-
কার্বোহাইড্রেট রয়েছে ৭৮.৯৮ গ্রাম
সুগার রয়েছে ৫৮.৯৬ গ্রাম
আশ রয়েছে ১০.১৪ গ্রাম
ফ্যাট রয়েছে ১.৫৫ গ্রাম
প্রোটিন রয়েছে ৪.৬৬ গ্রাম
থায়ামিন রয়েছে ১.৬৫
আরো পড়ুনঃ চুলের যত্নে মেহেদি পাতার উপকারিতা ও গুনাগুন
নিয়াসিন রয়েছে ১.৩২৫ মিলিগ্রাম
পেনটো থেনিক অ্যাসিড ১.৬৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন এ রয়েছে ৭.৬৫ মিলিগ্রাম
ফোটেল রয়েছে ১০.৬৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি রয়েছে ২.২৬ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম রয়েছে ২৭৮ মিলিগ্রাম
আইরন রয়েছে ৩.০১ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে ৭৬ মিলিগ্রাম।
ফসফরাস রয়েছে ৭৭ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম রয়েছে ৭৮৬ মিলিগ্রাম
জিংক রয়েছে ১.৬৯ মিলিগ্রা
ত্বীন ফল খাওয়ার নিয়মঃ
ত্বীন ফল খেলে আমাদের শরীরের নানান রোগ ভালো হতে সাহায্য করে যেমন, ডায়াবেটিকস , মাথা ব্যথা ,আমাশা ,শারীরিক সমস্যা,চুল উঠে যাওয়া ,মাসিকের সমস্যা, রক্তপিওা, রক্তস্রাব, ধাতুস্রাব, ইত্যাদি ও নানান রোগ। ত্বীন ফল আমাদের কোলেস্টরেল হরমন ঠিক রাখে। ত্বীন ত্বীন ফল এমন একটি খাবার যা সকাল , বিকাল ও রাত এই তিন সময় আমরা খেতে পারি। যার কোন সাইড ইফেক্ট নেই।
ত্বীন ফল এমন একটি খাবার যা কোরআন শরীফে আল্লাহ বলে গেছেন এটা সম্পর্কে । ত্বীন ফল আসলেই খুবই সুস্বাদু একটি খাবার। এটা আমরা যে কোন সময় যেকোন বয়সের মানুষ খেতে পারি। এ ফলটি আমাদের যৌবন ধরে রাখতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। বৃদ্ধ বয়সেও যৌবনকে ফিরে করতে প্রতিদিন ত্বীন ফল খান।
ত্বীন ফল নিয়ে কিছু হাদিসঃ
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত ত্বীন ফল নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে সম্পত্তি আমেরিকার একদল বিজ্ঞানী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, মানুষের সুন্দরতম গঠন এবং এর সুরক্ষার সাথে ত্বীন ফলের সম্পর্ক রয়েছে। আর এই তথ্যটা জেনে আমেরিকার এক দল গবেষক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। আমাদের সকলের শরীর থেকে একটি হরমোন নিঃসরিত হয়। এর নাম হলো মিথ্যালনদডস। এই হরমোনটি ১৮ থেকে৩৮ বয়স পর্যন্ত শরীর থেকে নির্গত হয়।
এর কাজ হল মানুষের বার্ধক্য রোধ করা, হার্ট স্টক থেকে তাকে রক্ষা করা , ব্রেইন স্টক থেকে তাকে রক্ষা করা।
ত্বীন ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যাবেঃ
ত্বীন ফল সাধারণত মরুভূমিতে চাষ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের অনেক চাষী ভাই এখন বাংলাদেশর বিভিন্ন জেলাতে এই ফলটি চাষ করে আসছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের মাটি ও আবহাওয়া ভালো হওয়ার কারণে কৃষিবিদ্যা বলছে এই ফসলের মাটি ত্বীন ফল চাষাবাদ এর জন্য উপযুক্ত। বাংলাদেশে প্রায় ১৫ টি ্ট জাত চাষ করা হয়। চলুন বন্ধুরা জেনে নেই কোন কোন স্থানে ত্বীন ফল চাষ করা হয়
রাজশাহী,চাঁপাইনবাবগঞ্জ,গাজীপুর,বগুড়া,পার্বত্যচট্টগ্রাম,মেহেরপুর,টাঙ্গাইলইত্যাদি।বাংলাদেশের আরও বিভিন্ন জেলাতে এই ত্বীন ফল বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করা হচ্ছে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url