ডাবের পানি খাবার উপকারিতা - ডাবের পানি খাবার নিয়ম ও সময়
খালি পেটে ডাবের পানি খেলে কি উপকার পাওয়া যাবে, ডাবের পানির পুষ্টিগুণ, সম্পর্কে জানতে যদি আপনি আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে পোস্টটি আপনার জন্য আমি বলছি আপনি যদি এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন করেন তাহলে ডাবের পানি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃডাবের পানি খাবার উপকারিতা - ডাবের পানির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
- ডাবের পানি খাবার উপকারিতা
- ডাবের পানির পুষ্টিগুণ
- খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা
- ডাবের জল খেলে কি প্রসাব বাড়ে
ডাবের পানি খাবার উপকারিতাঃ
আমাদের প্রত্যেককে শরীরের বাইরের সৌন্দর্য খেয়াল রাখার পাশাপাশি শরীরের ভেতরের ও যত্ন নেয়া প্রয়োজন। তার জন্য আমাদের প্রয়োজন পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য। ডাবের পানি এমন একটি তরল পদার্থ যা শরীরের ভেতর ও শরীরের বাইরে দুটোই ঠিক রাখে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ-প্রতিদিন একটা করে ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন-প্রতিদিন খাবার পর ও প্রতিদিন ঘুমানোর আগে একটি করে ডাবের পানি খেলে শরীর হবে সুস্থ, ত্বক হবে সুন্দর।
অতি পরিচিত একটি ফলের নাম ডাব। কিডনির সমস্যা ভালো হয় নিয়মিত ডাব খেলে। ডাবের পানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ যারা কিডনির রোগী। শরীরের কিডনি অকার্যকর হলে শরীরের পটাশিয়ামের মাত্রা অতিরিক্ত হলে দেহ থেকে বের করে দেয়। ফলে শরীরে থাকা পটাশিয়াম ও ডাবের পানিতে থাকা পটাশিয়াম একসাথে মিশে হৃৎপিণ্ড ও কিডনির কার্য ক্ষমতা বন্ধ করে দেয়।
প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে যেসব ব্যক্তিদের শরীরে এবং যাদের শরীর থেকে পটাশিয়াম বের হয় না তাদের ডাবের পানি খাওয়া উচিত নয়। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত কিডনির সমস্যার রোগীকে ডাবের পানি খাবার সময়।
যখন মানুষের শরীরে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রা কমে যায় তখন ডাক্তার ডাবের পানি খাবার পরামর্শ দেয়। ঘনঘন পাতলা পায়খানা ও বমি বমি হয় কলেরা ও ডায়রিয়া রোগীদের এতে তাদের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও খনিজ পদার্থ বের হয়ে যায়। সেই ঘাটটি পূরণ করার জন্য ডাক্তার পরামর্শ দেয় ডাবের পানি খাওয়ার জন্য।আসুন ডাবের পানি খাবার কিছু উপকারিতা জেনে নিই-
হজম শক্তি বৃদ্ধিতেঃহজম শক্তি বৃদ্ধিতে ডাবের পানির ভূমিকা অপরিসীম। আমাদের প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে নানান কাজে বাইরে বেরোতে হয়। আর বাইরে বেড়ানোর পর আমাদের নানান খাবার খেতে হয়। আর এইসব খাবার পর ঠিকমতো হজম হয় না। তার জন্য আমাদের ডাবের পানি খাওয়া উচিত।খাবার ভালোভাবে হজম হয় নিয়মিতভাবে ডাবের পানি খেলে।
পেটের ভেতর যেসব খাবার হজম হয় না সেই সব খাবার হজম করতে ডাবের পানি অনেক বড় ভূমিকা রাখে। তারফলে আমাদের শরীরের ওজনও কমতে শুরু করেকারো যদি হজম শক্তিতে সমস্যা হয় তাহলে তার ডাবের পানি খাওয়া উচিত। কাজে যদি খাবার হজম না হয় তাহলে সে যেন সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগে ও রাতে ঘুমানোর আগে একটি করে ডাবের পানি পান করে তাহলে তার হজম শক্তি সারা জীবনের জন্য নির্মূল হয়ে যাবে। কোন ডাক্তারদের পরামর্শ নেওয়া লাগবে না।
মুখে কালো দাগ দূর করতেঃমুখের দাগ ভালো করতে ডাবের পানি অনেক বড় ভূমিকা রাখে। আমাদের কারো না কারো মুখে কালো দাগ সৃষ্টি হয়েছে। আর এই কালো দাগ দূর করতে ডাবের পানি অনেক বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করে। আমাদের যদি কারো মুখে কাল দাগ হয় তাহলে সে যেন প্রতিদিন একটি করে ডাবের পানি খায়। তাছাড়া মুখের কালো দাগ দূর করতে ডাবের পানি নিয়ে মুখটা ভালো করে ধুয়ে নিলে আশা করা যায় মুখে কালো দাগ দূর হয়ে যাবে। আর এটা সপ্তাহে ছয় থেকে সাত দিন ব্যবহার করতে হবে।
চুল পড়া দূর করতেঃচুল পড়া দূর করতে ডাবের পানির ভূমিকা অপরিসীম। ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ যা চুল পড়া দূর করতে সাহায্য করে। কারো যদি চুল পড়া সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে প্রতিদিন ডাবের পানি দিয়ে গোসল করলে চুল পড়া কমে আসবে। আবার কারো যদি চুল পড়া সমস্যা থেকে থাকে তাহলে প্রতিদিন একটা করে ডাবের পানি খেলে চুল পড়া সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
ত্বকের সমস্যা দূর করতেঃত্বকের সমস্যা দূর করতে ডাবের পানি অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় ভিটামিন সি ও ভিটামিন যা ত্বককে সুন্দর ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। আমাদের কারো না কারো ত্বকের সমস্যা হয়ে থাকে। এটা আমাদের নিত্যদিনের ঘটনা। আর এই ত্বকের সমস্যা দূর করতে ডাবের পানি অনেক বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
কারো যদি ত্বকের কোন সমস্যা হয়ে থাকে সে যেন প্রতিদিন একটা করে ডাবের পানি খেয়ে থাকে। আবার কারো যদি ত্বকের কোন সমস্যা হয়ে থাকে প্রতিদিন গোসলের আগে ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধুলে ত্বক এর সমস্যা দূর হয়ে যাবে। আর এভাবে সপ্তাহে পাঁচ থেকে ছয় দিন ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধুলে ত্বকের সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতা আবার ফিরে আসবে। কোন ডাক্তারদের পরামর্শ নেয়া লাগবেনা।
চোখের নিচে কালো দাগ দূর করেঃচোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে ডাবের পানি অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে।কোন ব্যক্তির যদি চোখের নিচে কালো দাগ হয় তাহলে সে যেন প্রতিদিন একটি করে ডাবের পানি পান করে। তাহলে চোখের নিচে কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।
ডাবের পানির পুষ্টিগুণঃ
ডাব বা নারকেল বাংলাদেশের মানুষ এটা সম্পর্কে খুব ভালো করে পরিচিত। ডাবের গাছ বাংলাদেশের সব জায়গাতে পাওয়া যায়। তাছাড়া প্রতিদিন ডাবের পানি খেলে নানান রোগ ভালো হয় যেমন-কোষ্ঠকাঠিন্য, চোখের নিচে কাল দাগ,ডায়রিয়া,কলেরা,কিডনির সমস্যা,ত্বকের সমস্যা ,চুল পড়া, মুখের কালো দাগ,স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি,আরও নানান কাজে ডাবের পানি ব্যবহার করা হয়ডাব বা নারকেল যেমন পরিচিত তেমনি এতে রয়েছে নানান পুষ্টিগুণ
চলুন বন্ধুরা ২০০ গ্রাম ডাবের পানিতে কতটুকু পুষ্টিগুণ রয়েছে জেনে নিন -
- পটাশিয়াম রয়েছে ১৬৫ গ্রাম
- খনিজ পদার্থ রয়েছে ২.৬ গ্রাম
- আমিষ রয়েছে ৪.৬ গ্রাম
- শকরা রয়েছে ৪.৬ গ্রাম
- চর্বি রয়েছে ১.২৬ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম রয়েছে ৩০ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস রয়েছে ১.০৫ মিলিগ্রাম
- আইরন রয়েছে ১.০৬ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি রয়েছে ২২ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি ২ রয়েছে ১.২৬ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন সি রয়েছে ১০ মিলিগ্রাম
- খাদ্য ও ক্যালসিয়াম রয়েছে ৪৬ মিলিগ্রাম
খালি পেটে ডাবের পানি উপকারিতাঃ
ডাবের পানি যা অতি সাধারণ একটি পানি এবং এটি সব জায়গাতে পাওয়া যায় তাছাড়া দামেও খুবই সস্তা। আমাদের সবাই জানি ডাবের পানি ভরা পেটে খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে।কিন্তু আমার অনেকে জানি না খালি পেটে ডাবের পানি খেলে কি হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ডাবের পানি খেলে যা আপনার শরীরে অনেক ভাল প্রভাব ফেলবে। সাধারণ মানুষের একটি ধারণা ডাবের পানি খেলে ওজন বৃদ্ধি পায়। এটি একটি ভুল ধারণা ডাবের পানি খেলে আমাদের শরীরের ওজন ঠিক থাকে।
ডাবের জল খেলে কি প্রসাব বাড়েঃ
আমাদের অনেকের মনেই ভ্যানতো ধারণা যে ডাবের জল খেলে প্রসাব বাড়ে। কিন্তু আমেরিকার এই গবেষণা দেখা গেছে-প্রতিদিন ডাবের জল খেলে প্রসাবে যত জীবাণু থাকে সবগুলোকে দূর করি এবং প্রস্রাব স্বাভাবিক রাখে। আমাদের শরীরকে সুস্থতার রাখার জন্য আমাদের প্রতিদিন প্রয়োজন একটি করে ডাবের জল খাওয়া।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url