আম খাবার উপকারিতা - আম খাবার নিয়ম
পোস্ট সূচিপত্রঃআম খাবার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
- আম খাওয়ার উপকারিতা
- আমের পুষ্টিগুণ
- বাংলাদেশে কত প্রকারে দাম পাওয়া যায়
- কোন জেলাতে বেশি আম উৎপাদিত হয়
আম খাবার উপকারিতাঃ
ফলের রাজা বলা হয় আমকে। আম খেতে পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব
মুশকিল। পাকা আম শুধু স্বাদে ও গন্ধে তুলনীয় নয়, আমে রয়েছে অনেক
পুষ্টিগুণ সেটা কাঁচা হোক কিংবা পাকা। আম পাকা হোক কিংবা কাঁচা শরীরের জন্য দুটোই
খুবই ভালো। আমপাকা হোক কিংবা কাঁচা, অল্প পরিমাণে খেলে শরীরে কোন খারাপ প্রভাব
পড়ে না।
আরো পড়ুনঃ বেল খাওয়ার উপকারিতা ও বেলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন
আম আমাদের মুখরোচক ফলের মধ্যে অন্যতম। আম প্রেমীদের কাছে আম পাকা হোক কিংবা কাঁচা দুটোই তাদের প্রিয় ফল।আম আসলে গ্রীষ্মকালীন একটি ফল। সাধের দিক থেকে পাকা আম একটু মিষ্টি হয় আর কাঁচা আম একটু টক হয়। আম পাকা হোক কিংবা কাঁচা আমাদের সকলকে আম খাওয়া উচিত কারণ কারণ আমরা যদি প্রতিদিন আম খাই তাহলে পৃথিবীর সকল রোগ থেকে ইংলিশে মুক্তি পেতে পারি।
গরমের সময় অনেক মানুষ আছে যারা শরবত হিসাবে পান করে। আবার অনেক আম প্রিয় আছে যারা লবণ,মরিচ ও চিনি দিয়ে কাঁচা আম ভর্তা করে খাই। আবার অনেকে আছে যারা কাঁচা আমের আচার করে রাখে সেটাকে সারা বছর খাবে বলে। এর ফলে আমকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। আমে রয়েছে নানান গুনাগুএ। পাকা আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ,ভিটামিন এ ,মিনারেল ,খনিজ লবণ ও কার্বাইড । যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে অনেকটাই সাহায্য করে।
এই পাকা আম আমাদের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তাছাড়া আম আমাদের জ্বর ও সর্দি কাশি ভালো করতে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট যা আমাদের শরীরে শক্তি জগতে সাহায্য করে। তাছাড়া আমি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও মিনারেল যা আমাদের শরীরের রক্ত চলাচল ঠিক রাখে এবং হার্টবিট সুস্থ রাখে। যাদের রক্ত দূষিত বা রক্তের সমস্যা আছে তাদের প্রতিদিন একটি করে আম খাওয়া উচিত এতে করে রক্তের সমস্ত জীবাণু দূর হয়ে যাবে।
চলুন বন্ধুরা আম খাবার কিছু উপকারিতা জেনে আসি,
ত্বক ভালো রাখেঃত্বক ভালো রাখতে আম খাওয়ার ভূমিকা অপরিসীম। আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ আমাদের ত্বকে এত সুন্দর রাখতে সাহায্য করে প্রতিদিন আম খেলে ত্বক সুন্দর ও সমৃদ্ধ হয়। আম আমাদের ত্বকের ভিতর থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আপনি কেউ যদি প্রতিদিন দুই টুকরো করে আম খাই তাহলে তাকে তার ত্বক নিয়ে আর ভাবতে হবে না।
আরো পড়ুনঃ টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও টক দই এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানেন
স্মৃতিশক্তি বাড়াইঃআমাদের শরীরে নানান রোগের দেখা দেয় আমাদের শরীরে মিনারেলের ঘাটতি দেখা দিলে। এই ঘাটতিটা পূরণ হয়ে যায় অনেকাংশেই আম খেলে। প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে আমি। যা স্মৃতি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। যদি কেউ পরিশ্রম করার পর আম খায় তাহলে তার হারানো শক্তি আবার ফিরে আসবে। আমাদের শরীর থেকে যে লবণ বের হয়ে যায় সে লবণের ঘাটতিও আম পূরণ করে দেয়। তাই আমাদের প্রতিদিন আম খাওয়া উচিত।
হৃদরোগ দূর করেঃহৃদরোগ ভালো করতে আমের ভূমিকা অপরিসীম।হৃদরোগ হচ্ছে বর্তমানে ভয়ের অন্যতম কারণ। আমরা যদি প্রতিদিন আম খাই তাহলে হৃদরোগ থেকে বাঁচতে পারব। আমে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন। আর আমে ভিটামিন এ এর উৎস। আম খেলে হৃদরোগ ভালো করার পাশাপাশি , আপনার শরীর থেকে আরও নানান রোগ দূর করে দেয় যেমন জ্বর,সর্দি ও কাশি,বুকে জ্বালাপোড়া,ঠান্ডা সমস্যা, হজমে সহায়ক ইত্যাদি।
আমের পুষ্টিগুণঃ
আম পছন্দ করে না পৃথিবীতে এমন মানুষ খুবই কম আছে। পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশে আম নামক সুস্বাদু ফলটা জন্মায়। আমাদের ত্বক কে সুন্দর উজ্জ্বল করে পাকা আম। পাকা আম আমাদের শরীর এর ভিতর গিয়ে আমাদের ত্বককে এবং ত্বকের বাইরে থেকে সুন্দর রাখে।
আরো পড়ুনঃ রাজশাহী শহর কিসের জন্য বিখ্যাত বিস্তারিত জানুন
প্রতি ২০০ গ্রাম আমের পুষ্টি উপাদান উল্লেখ করা হলো,
- খাদ্য শক্তি রয়েছে ১৩০ কিলো ক্যালরি
- সরকরা রয়েছে ২৭.৯ গ্রাম
- ফাইবার রয়েছে ২.৮ গ্রাম
- ফ্যাট রয়েছে ১.৫৬ গ্রাম
- কার্বোহাইটেড রয়েছে ৩৫ গ্রাম
- প্রোটিন রয়েছে ১.৫৬ গ্রাম
- ভিটামিন এ রয়েছে ১১০ মাইক্রো গ্রাম
- বিটা ক্যারোটিন রয়েছে ৮৫০ মাইক্রগ্রাম
- লুটেইন রয়েছে ৪৬ গ্রাম
- খাইয়ামিন রয়েছে১.২৫৮ মিলিগ্রাম
- নিয়াসিন রয়েছে ১.৬৫৪ মিলিগ্রাম
- রিব্লোভিন রয়েছে ১.৬৫২ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি রয়েছে ৬ মিলিগ্রাম।
- ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রয়েছে ৮ মিলিগ্রাম
- ফোটাল রয়েছে ৮৯ মিলিগ্রাম
- কৌলিন রয়েছে ৯.৮ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন ই রয়েছে ১.৯ কিলোগ্রাম
- ভিটামিন সি রয়েছে ৭৫.৮ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন কে রয়েছে ৮.৪ মাইক্রগ্রাম
- আইরন রয়েছে ১.৫৮ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম রয়েছে ২২ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস রয়েছে ২৮ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে ২০ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম রয়েছে ২৮৯ মিলিগ্রাম
- কপার রয়েছে ১.৫৬৫ মিলিগ্রাম
- জিংক রয়েছে ১.৬৫ মিলিগ্রাম
- সোডিয়াম রয়েছে ২ মিলিগ্রাম
- ও মেগা রয়েছে ৫ মিলিগ্রাম
- পানি রয়েছে ৯৮.৮ গ্রাম
বাংলাদেশে কত প্রকারে দাম পাওয়া যায়ঃ
বাংলাদেশে আমকে বলে ফলের রাজা। গ্রীষ্মকালের রোদ গরম -যতই বাড়ে মানুষ ততই গ্রীষ্মকালীন ফল খাওয়ার জন্য বসে থাকে। গ্রীষ্মকালীন সুস্বাদু একটি ফলের নাম হচ্ছে আম। বাংলাদেশের কিছু সুস্বাদু আম নিচে উল্লেখ করা হলোঃ-
- বোম্বাই আম
- চোষা আম
- বিন্দাবনি আম
- গোল বোম্বাই আম
- হাড়িভাঙ্গা আম
- সুরমা ফজলি আম
- হাইবিড ১০ আম
- গুলবাহার আম
- মিশ্রি ভোগ আম
- তোতাপুরি আম
- চিনিদানা আম
- মধু বুলবুলি আম
- সুরমা আম
- বাড়ি আম ৭ আম
- অগ্রবতী আম
- ল্যাংড়া আম
- বড় গুটি আম
- মধু গুটি আম
- ফজলি আম
- লক্ষণ ভোগ আম
- কালী ভোগ আম
- বেল ভোগ আম
- সুবর্ণরেখা আম
- মোহন ভোগ আম
- আস্নি আম
- সিন্ধু আম
- কহি তুল আম
- কাঁচা মিঠা আম
কোন জেলাতে বেশি আম উৎপাদিত হয়ঃ
রাজশাহী জেলাকে আমের রাজ্য বলা হয়। কারণ বাংলাদেশের তৃতীয়াংশ জেলাতে রাজশাহী
জেলাএকাই আম সর্বদাহ করে। রাজশাহী জেলাতে ৮ থেকে ১০ লাখ টন হবে
বলে আশা করা যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জে থেকে ৪ লাখ টন,রাজশাহী থেকে
৩ লাখ টন,নওগাঁ থেকে ৩ লাখ টন আম প্রতি বছর পাওয়া যায়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url